Menu

আলুর পোকা মাকড় ব্যবস্থাপনা

পোকার নাম : কাটুই পোকা


পোকা চেনার উপায় : ছোট আকারের মথ, হালকা বাদামি। এরা নিশাচর অর্থাৎ রাতে এদের বেশি দেখা যায়। কীড়ার রং বেগুনী থেকে বাদামি বেগুনী। এই পোকা মাটিতে থাকে।
ক্ষতির ধরণ : রাতে চারার গোড়া কেটে ফেলে। চারা ঢলে পড়ে অথবা শুকিয়ে মারা যেতে পারে।
আক্রমণের পর্যায় : চারা
পোকামাকড় জীবনকাল : পূর্ণ বয়স্ক
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কান্ডের গোঁড়ায়
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : লার্ভা , কীড়া
ব্যবস্থাপনা :
আক্রমণ বেশি হলে কারটাপ জাতীয় কীটনাশক ( কেয়ার ৫০ এসপি অথবা সানটাপ ৫০ এসপি ২০ মিলি / ৪ মূখ ) অথবা ল্যামডা-সাইহ্যালোথ্রিন জাতীয় কীটনাশক ( ক্যারাটে ২.৫ ইসি অথবা ফাইটার প্লাস ২.৫ ইসি ১৫ মিলি / ৩ মূখ ) ১০ লিটার প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। কীটনাশক স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

পোকার নাম : জাব পোকা

পোকা চেনার উপায় : খুব ছোট সবুজাভ সাদা, নরম দেহ বিশিষ্ট।
ক্ষতির ধরণ : পাতা, ফুল ও কচি ফলের রস চুষে খায়।তাছাড়া এই পোকা হলুদ মোজাইক ভাইরাস রোগ ছড়ায়।
আক্রমণের পর্যায় : বাড়ন্ত পর্যায়, চারা
পোকামাকড় জীবনকাল : পূর্ণ বয়স্ক, কীড়া
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কাণ্ড , পাতা , ডগা
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : লার্ভা , পূর্ণ বয়স্ক , কীড়া
ব্যবস্থাপনা :
আক্রমণ বেশি হলে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। কীটনাশক স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।


পোকার নাম : আলুর সুতলী পোকা

পোকা চেনার উপায় : আলুর সুতলী পোকার মথ আকারে ছোট, ঝালরযুক্ত, সরু ডানা বিশিষ্ট বাদামি হয়। পূর্ণাঙ্গ কীড়া সাদাটে বা হাল্কা গোলাপী বর্ণের এবং ১৫-২০ মি.মি লম্বা হয়ে থাকে।
ক্ষতির ধরণ : কীড়া আলুর মধ্যে লম্বা সুড়ঙ্গ করে আলুর ক্ষতি করে থাকে।
আক্রমণের পর্যায় : বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : আলূ
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : কীড়া
ব্যবস্থাপনা :
বাড়িতে সংরক্ষিত আলু শুকনা বালি, ছাই, তুষ, অথবা কাঠের গুড়ার একটি পাতলা স্তর (আলুর উপরে ০.৫ সেমি) দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। আলু সংরক্ষণ করার আগে সুতলী পোকা আক্রান্ত আলু বেছে ফেলে দিতে হবে।

পোকার নাম : পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা

পোকা চেনার উপায় : বয়স্ক পোকা দেখতে খুব ছোট ও ধুসর বর্ণের ।
ক্ষতির ধরণ : ক্ষুদ্র কীড়া পাতার দুইপাশের সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। তাই পাতার উপর আঁকা বাঁকা রেখার মত দাগ পড়ে এবং পাতা শুকিয়ে ঝড়ে যায়।
আক্রমণের পর্যায় : বাড়ন্ত পর্যায়, চারা
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : কীড়া
ব্যবস্থাপনা :
আক্রমণ বেশি হলে থায়ামিথক্সাম+ক্লোথায়ারানিলিপ্রল জাতীয় কীটনাশক (যেমন ভলিউম ফ্লেক্সি ৫ মিলিলিটার অথবা ১মুখ ) অথবা সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার। কীটনাশক স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। 


পোকার নাম : আলুর ফ্লি বিটল

পোকা চেনার উপায় : ছোট কালো রঙের পোকা, পিঠে লাল এবং বাদামি রঙের দাগ আছে।
ক্ষতির ধরণ : পূর্ণ বয়স্ক ও বাচ্চা উভয়ই ক্ষতি করে । পূর্ণ বয়স্করা চারা গাছের বেশি ক্ষতি করে । এরা পাতা ছোট ছোট ছিদ্র করে খায় ।
আক্রমণের পর্যায় : বাড়ন্ত পর্যায়, চারা
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : ফেজ -১ , পূর্ণ বয়স্ক , কীড়া
ব্যবস্থাপনা :
সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার। কীটনাশক স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। 

গমের রোগ ব্যবস্থাপনা


রোগের নাম : গোড়া পঁচা রোগ (Foot and root rot)

আলুর রোগ ব্যবস্থাপনা

আলুর রোগ ব্যবস্থাপনা


 

রোগের নাম : নাবি ধ্বসা

   

রোগের কারণ : ছত্রাক
ক্ষতির ধরণ : পাতার উপর ফ্যাকাশে অথবা ফিকে সবুজ রঙের গোলাকার অথবা এলোমেলো পানি ভেজা দাগ পড়ে। কুয়াশাছন্ন মেঘলা আবহাওয়ায় দাগ সংখ্যা ও আকার দ্রুত বাড়তে থাকে। গাছের পাতা ও কাণ্ড বাদামী থেকে কালচে আকার ধরণ করে। আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে গাছের কাণ্ড ও সবুজ ফলেও রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। রোগের লক্ষণ দেখা দেবার ৩-৪ দিনের মধ্যে গাছ ঝলসে যায় ও দ্রুত মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা
ব্যবস্থাপনা :
ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন (রিডোমিল গোল্ড অথবা ডাইথেন -এম-৪৫ ২০ গ্রাম ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২ দিন পরপর স্প্রে করা ছত্রাকনাশক স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

রোগের নাম : আলুর শুকনো পচা রোগ
রোগের কারণ : ছত্রাক
ক্ষতির ধরণ : আলুর গায়ে কিছুটা গভীর কালো দাগ পড়ে। আলুর ভিতরে গর্ত হয়ে যায়। প্রথম পচন যদিও ভিজা থাকে পরে তা শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়। আক্রান্ত অংশে গোলাকার ভাঁজ এবং কখনো কখনো ঘোলাটে সাদা ছত্রাক জালিকা দেখা যায়।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : আলূ
ব্যবস্থাপনা :
আলু ভালভাবে বাছাই করে সংরক্ষণ করতে হবে। যথাযথ কিউরিং করে আলু গুদামজাত করতে হবে। ডাইথেন এম ৪৫ দ্রবণ (০.২%) দ্বারা বীজ আলু শোধন করতে হবে। বস্তা, ঝুড়ি ও গুদামজাত আলু ৫% ফরমালিন দিয়ে শোধন করতে হবে।

 রোগের নাম : গোল আলুর স্ক্যাব রোগ

রোগের কারণ : ব্যাকটেরিয়া
ক্ষতির ধরণ : এ রোগের আক্রমণে আলুর গা এবড়ো থেবড়ো হয়ে যায়, দাগ পড়ে এবং আলুর গায়ে গর্তের সৃষ্টি হয়।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : আলূ
ব্যবস্থাপনা :
জমিতে অতিরিক্ত ইউরিয়া ব্যবহার না করা। জমিতে শতাংশ প্রতি ১৮০ গ্রাম জিপসাম প্রয়োগ করা। রোগ সহনশীল জাত যেমন বারি আলু ২৫, বারি আলু ২৮, বারি আলু ৩১, বারি আলু ৩৪, বারি আলু ৪১ চাষ করা যেতে পারে । জমিতে হেক্টর প্রতি ১২০ কেজি জিপসাম সার ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় সেচের তারতম্যের কারনে দাদ রোগ হতে পারে। সেজন্য আলু লাগানোর ৩০-৩৫ দিন পর্যন্ত কোন অবস্থাতে যেন মাটির রসের ঘাটতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আলু উত্তোলনের সময় মাটিতে রস বেশি থাকলে দাদ রোগ হতে পারে। গাছের বয়স ৭০ দিন হলে সেচ দেয়া বন্ধ করতে হবে।


রোগের নাম : পাউডারী মিলডিউ
রোগের কারণ : ছত্রাক
ক্ষতির ধরণ : পাতা ও গাছের গায়ে সাদা পাউডারের মত দাগ দেখা যায়, যা ধীরে ধীরে সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়ে । আক্রমণ বেশী হলে পাতা হলুদ বা কালো হয়ে মারা যায় ।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা
ব্যবস্থাপনা :
সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন ( কুমুলাস ৪০ গ্রাম বা গেইভেট বা মনোভিট ২০ গ্রাম অথবা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: গোল্ডাজিম বা এমকোজিম ১০ মিলি ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন । ছত্রাকনাশক স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।


রোগের নাম : ঢলে পড়া রোগ
রোগের কারণ : ছত্রাক /ব্যাকটেরিয়া
ক্ষতির ধরণ : প্রথমে কচি পাতা ঢলে পড়ে বা নিচের বয়স্ক পাতা বির্বণ হয়ে যায়। প্রথম দিকে গাছের অংশ বিশেষ, কয়েক দিন পরে পুরো গাছ ঢলে পড়ে। আক্রান্ত কান্ডের ভিতরের অংশ কাল বাদামি রঙ ধারন করে, পানি গ্রহণে বাঁধা দেয়। গাছের গোড়ার প্রায় ২ ইঞ্চি ডাল কেটে পানিতে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে কাটা অংশ হতে কোন রস বের না হয় ,পানির রঙের কোন পরিবর্তন না হয় তাহলে ছত্রাকের আক্রমণ বুঝতে হবে। বের হলে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন ।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায় , চারা
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কাণ্ড , পাতা
ব্যবস্থাপনা :
ছত্রাকের আক্রমণ হলে ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন ( রিডোমিল গোল্ড ২০ গ্রাম) অথবা কার্বান্ডিজম জাতীয় ছত্রানাশক যেমন (এইমকোজিম ৫০;অথবা গোল্ডাজিম ৫০০ ইসি ১০ মিলি /২ মুখ ) ১০ লি পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন পরপর ৩ বার গাছের গোড়ায় ও মাটিতে স্প্রে করুন। আক্রমণ বোশি হলে প্রথম থেকে প্রতি লিটার পানিতে ২গ্রাম রোভরাল মিশিয়ে স্প্রে করুন। ছত্রাকনাশক স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণ হলে ক্ষেতের মাটিতে বিঘাপ্রতি ২ কেজি হারে ব্লিচিং পাউডার ছিটাতে হবে।


রোগের নাম : আলুর ইয়োলো ভাইরাস রোগ
রোগের কারণ : ভাইরাস
ক্ষতির ধরণ : এর রোগ হলে গাছে হলুদ ও গাঢ় সবুজ ছোপ ছোপ মোজাইক করা পাতা দেখা দেয় এবং পাতা কুঁকড়ে যায়।আক্রান্ত পাতা হলদে হয়ে যায়, বিচিত্র আকারের দাগ দেখা যায়, কুকড়ে যায় । গাছ ছোট হয়ে যায়।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায় , চারা
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা
ব্যবস্থাপনা :
জাব পোকা এ রোগের বাহক, তাই এদের দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। কীটনাশক স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।


রোগের নাম : আলুর কালো বা নরম পচা রোগ
রোগের কারণ : ব্যাক্টেরিয়া
ক্ষতির ধরণ : মাঠে গাছের গোড়ায় কালো দাগ পড়লে তাকে কালো পচা এবং গাছ ও টিউবার আক্রান্ত হলে নরম পচা রোগ বলে । আক্রান্ত গাছের টিউবার পচে যায় । সংরক্ষিত আলুতে এ রোগে আক্রান্ত আলু পচে যায় এবং পচা আলুতে এক ধরণের উগ্র গন্ধের সৃষ্টি হয়। চাপ দিলে আলু থেকে রস বেরিয়ে আসে যা অন্য সুস্থ আলুকে আক্রমন করে । আক্রান্ত অংশ বাদামি রংয়ের ও নরম হয় যা সহজেই সুস্থ অংশ থেকে আলাদা করা যায়
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : চারা , পূর্ণ বয়স্ক , ফলের বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কাণ্ড , ফল
ব্যবস্থাপনা :
জমিতে কয়েকবার দানাদার ফসল চাষ করে আবার আলু চাষ করা। বিকল্প পোষক যেমন: আগাছা পরিস্কার রাখা ও ফসলের পরিত্যাক্ত অংশ ধ্বংস করা ।


রোগের নাম : আগাম ধ্বসা
রোগের কারণ : ছত্রাক
ক্ষতির ধরণ : প্রথমে নিচের পাতায় ছোট ছোট কালো থেকে বাদামি চক্রাকার দাগ দেখা যায়। দাগের চারিদিক হলুদ সবুজ বলয় দেখা যায়। যা দেখতে আনেকটা গো- চোখের মত। আক্রমন বেশি হলে অনেকগুলো দাগ একত্রে মিশে যায়। গাছ হলদে হয়ে পাতা নুয়ে পড়ে এবং অকালে মারা যায়।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : পূর্ণ বয়স্ক
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কাণ্ড , পাতা , ফল
ব্যবস্থাপনা :
পাতায় ২/১টি দাগ দেখার সাথে সাথে প্রতি লিটার পানিতে ইপ্রোডিয়ন বা মেনকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ( যেমন: রোভরাল বা ডাইথেন এম ৪৫ ২০ গ্রাম ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন । ছত্রাকনাশক স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।


রোগের নাম : Hollow Heart
রোগের কারণ : অপরজীবী জনিত রোগ
ক্ষতির ধরণ : বড় বড় আলুর কেন্দ্রে অসম ফাঁপা অংশ সৃষ্টি হয়। পাশের কোষ সমূহ খসখসে ও বাদামি বর্ণ ধারণ করে যা বাহির থেকে বুঝা যায় না।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : আলূ
ব্যবস্থাপনা :
এই রোগের প্রতিকারের উপায় হল কম দূরত্বের বপন, সুষম সার ব্যবহার করা ও নিয়মিত সেচ প্রদান করা ।


রোগের নাম : ভিতরের কালো দাগ
রোগের কারণ : অপরজীবী জনিত রোগ
ক্ষতির ধরণ : টিউবারের কেন্দ্র কালো বা নীলচে কালো রং ধারণ করে। অক্সিজেনের অভাব বেশি হলে সমস্ত টিউবারই কালো হয়ে যেতে পারে। আক্রান্ত অংশ সংকুচিত হয়ে ফেঁপে যেতে পারে।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : আলূ
ব্যবস্থাপনা :
এই রোগের প্রতিকারের উপায় হল উচ্চ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করা ও গুদামে বাতাস চলাচলে ব্যবস্থা রাখা।


Source: aisekrishi

গমের পোকামকড় ব্যবস্থাপনা

গমের পোকামকড় ব্যবস্থাপনা


পোকার নাম : গমের স্টিং বাগ পোকা



পোকা চেনার উপায় : বাদামি রঙের চেপ্টা আকৃতির পোকা
ক্ষতির ধরণ : দুধ আসা অবস্থায় ক্ষতি বেশী করে । ফলে গমের গায়ে দাগ হয় ও গম চিটা হয়।
আক্রমণের পর্যায় : কুশি
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : ফুল
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : পূর্ণ বয়স্ক , নিম্ফ
ব্যবস্থাপনা :
কার্বারিল জাতীয় কীটনাশক( যেমন: সেভিন ৮৫ ডব্লিউপি ২৭ গ্রাম) অথবা ডাইমিথোয়েট জাতীয় কীটনাশক যেমন ( রোগর অথবা টাফগর ২০ মিলি) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন ।ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

পোকার নাম : কাণ্ড ছিদ্রকারী মাজরা পোকা

পোকা চেনার উপায় : গোলাপী রঙের কীট
ক্ষতির ধরণ : এ পোকা গমের কুশি / মাইজ কেটে দেয় । আক্রান্ত কুশি হলুদ হতে থাকে এবং এক সময় মারা যায় ।
আক্রমণের পর্যায় : কুশি
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কান্ডের গোঁড়ায়
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : কীড়া
ব্যবস্থাপনা :
শতকরা ৫ টি মরা শীষ পাওয়া গেলে অনুমোদিত থায়োমিথোক্সাম(২০%)+ ক্লোরানিলিপ্রোল (২০%) জাতীয় কীটনাশক (যেমনঃ ভিরতাকো ১.৫ গ্রাম ) অথবা কারটাপ জাতীয় কীটনাশক (যেমনঃ কারটাপ বা সানটাপ ২৪ গ্রাম ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে অথবা ফিপ্রনিল জাতীয় কীটনাশক (যেমনঃ রিজেন্ট বা গুলি ১০-১৫ মিলি) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

পোকার নাম : জাব পোকা

পোকা চেনার উপায় : খুব ছোট সবুজাভ সাদা, নরম দেহ বিশিষ্ট
ক্ষতির ধরণ : এ পোকা পাতা, গাছ ও কচি দানার রস চুষে খায়। এর আক্রমন বেশি হলে শুটি মোল্ড ছক্রাকের আক্রমন ঘটে এবং গাছ মরে যায় ।
আক্রমণের পর্যায় : বাড়ন্ত পর্যায়, ফলের বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা , ফল
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : পূর্ণ বয়স্ক , নিম্ফ
ব্যবস্থাপনা :
আক্রমণ বেশি হলে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সুত্রঃ aisekrishi

ভূট্টা ফসলের রোগ ও তার প্রতিকার

ভূট্টা ফসলের রোগ ও তার প্রতিকার

কে, এম, খালেকুজ্জামান
বাংলাদেশে ধান ও গমের পর ভূট্টা তৃতীয় ও উচ্চ ফলনশীল দানা জাতীয় ফসল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইহা বহুবিধ খাদ্য তৈরীতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং কোন কোন দেশে ইহা প্রধান খাদ্য। কিন্তু বাংলাদেশে সাধারনতঃ পশু, মুরগী ও মৎস্য খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ধান ও গমের তুলনায় এতে প্রায় ১১% আমিষ জাতীয় উপাদান রয়েছে। বিভিস্ন সমস্যার কারণে বাংলাদেশে ভূট্টার ফলন অনেক কম। তার মধ্যে রোগ একটা অন্যতম কারণ। বাংলাদেশে ভূট্টার মোট ২৮ টি রোগ সনাক্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে ১৯ টি ছত্রাকজনিত, ১ টি ব্যাকটেরিয়াজনিত, ৩ টি ভাইরাসজনিত এবং ৫ টি কৃমিজনিত রোগ। ভূট্টার রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ভূট্টার উৎপাদন অনেকাংশে বৃদ্ধি করা সম্ভব। ভূট্টার কয়েকটি প্রধান রোগ ও তাদের দমন ব্যবস্থা সম্পর্কে নিম্নে বর্ণনা করা হল।
১। রোগের নামঃ বীজ পচা, মুল পচা  ও চারা ঝলসানো রোগ (Seed rot, root rot and seedling blight)
রোগের কারণঃ রাইজোকটোনিয়া (Rhizoctonia), ফিউজারিয়াম (Fusarium), স্লে­ারোসিয়াম (Sclerotium), পিথিয়াম (Pythium) ইত্যাদি ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ বীজ ও মাটির মাধ্যমে এ রোগটি ছড়ায়। মাটির আর্দ্রতা বেশী হলে ছত্রাকের আক্রমণের মাত্রা বেড়ে যায়।
রোগের লক্ষণঃ
  • বীজ পচা এবং চারা নষ্ট হওয়ার কারণে সাধারণত ক্ষেতে ভূট্টা গাছের সংখ্যা কমে যায়।
  • বপন করা বীজ পচে যায়।
  • চারা গজানোর পুর্বেই বীজের অংকুর মরে যায়।
  • চারা ঝলসে যায়।
  • গোড়া ও শিকড় পচে যায়।
  • শিকড় বাদামী থেকে কালো রং ধারণ করে।
  • গজানো চারা ঢলে পড়ে ও মরে যায়।


প্রতিকারঃ
  • সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত বীজ বপন করতে হবে।
  • ফসল উঠার পর প্রখর রৌদ্রে (মার্চ-এপ্রিল মাসে) জমি চাষ করে ফেলে রাখতে হবে।
  • উত্তমরূপে জমি চাষ ও পরিমিত রসে বীজ বপন করতে হবে, অর্থাৎ মাটিতে অধিক রস রাখা যাবে না।
  • কার্বেন্ডাজিম (অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।

২। রোগের নামঃ পাতা ঝলসানো রোগ (Leaf Blight)
রোগের কারণঃ হেলমিনথোসপোরিয়াম টারসিকাম (Helminthosporium Turcicum Syn. Bipolaris turcicum) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ এ রোগের জীবাণু গাছের আক্রান্ত অংশে অনেক দিন বেঁচে থাকে। জীবাণুর বীজকণা বা কনিডিয়া বাতাসের সাহায্যে অনেক দূর পর্যন্ত সুস্থ গাছে ছড়াতে পারে। বাতাসের আর্দ্রতা বেশী হলে এবং ১৮-২৭ ডিগ্রি সেঃ তাপমাত্রায় এ রোগের আক্রমণ বেড়ে যায়।
রোগের লক্ষণঃ
  • গাছের নীচের দিকের পাতায় লম্বা বা  ডিম্বাকার দাগ দেখা যায়।
  • পরে আক্রান্ত দাগগুলো আকারে বড় হয়।
  • পরবর্তীতে গাছের উপরের অংশে বিস্তার লাভ করে।
  • দাগগুলো শিরা বরাবর বাড়তে থাকে এবং ধূসর বর্ণ ধারণ করে।
  • রোগের প্রকোপ  বেশী হলে গাছের পাতা আগাম শুকিয়ে যায় ও গাছ মারা যায় যা অনেক সময় খরায় আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে হয়।

প্রতিকারঃ
  •  রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে।
  • ফসল সংগ্রহের পর পাতা, কান্ড ইত্যাদি পুড়ে ফেলতে হবে।
  • পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ এবং পরিমিত সার ও সেচ প্রদান করতে হবে।
  • কার্বেন্ডাজিম (অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
  • রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত ফসলে প্রোপিকোনাজোল (টিল্ট ২৫০ ইসি) ১ লিটার পানিতে ০.৫ মিলি অথবা কার্বেন্ডাজিম (অটোস্টিন) ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।

৩। রোগের নামঃ ডাউনি মিলডিউ (Downy mildew)
রোগের কারণঃ  পেরোনোস্কে¬রোস্পোরা সরগাই (Peronosclerospora sorghi) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ মাটি, পোষক ও আক্রান্ত বীজ দ্বারা ছড়ায়।
রোগের লক্ষণঃ
  •      আক্রান্ত গাছ খর্বাকৃতি, দুর্বল ও বিবর্ণ হয়।
  •     আক্রান্ত পাতায় লম্বা লম্বা সাদাটে দাগ পড়ে।
  •    আক্রান্ত পাতার নীচে সাদা ছত্রাক এবং ছত্রাকের বীজকনা দেখা যায়।
  •  পুর্ণ বয়স্ক গাছ আক্রান্ত হলে মোচার আকার ছোট হয় অথবা অনেক সময় মোচা পুরোপুরি হয় না। এ রকম লক্ষণকে ক্রেজি টপ বলে।
প্রতিকারঃ
  •    রোগমুক্ত সুস্থ বীজ বপন করতে হবে।
  •   আক্রান্ত গাছ দেখা মাত্র তুলে পুড়ে ফেলতে হবে।
  •   জমি থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
  •   মেটালেক্সিল + ম্যানকোজেব (রিভোমিল গোল্ড) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
 আক্রান্ত গাছে মেটালেক্সিল + ম্যানকোজেব (রিভোমিল গোল্ড) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
৪। রোগের নামঃ  পাতায় দাগ বা কারভুলারিয়া লিফ স্পট (Curvularia leaf spot)
রোগের কারণঃ কারভুলারিয়া (Curvularia lunate C. Maculans ) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ বেশি আর্দ্রতা ও তাপমাত্রায় আক্রমণ বাড়ে। জীবাণু মাটিতে এবং আক্রান্ত গাছে  থাকে, বাতাস ও পানি মাধ্যমে ছড়ায়।
রোগের লক্ষণঃ
  •  প্রথমে ভুট্টার পাতায় ছোট ছোট গোল অথবা ডিম্বাকৃতির হলুদাভ দাগ পড়ে।
  •    পরবর্তীতে এ দাগগুলো বাদামী রং ধারণ করে এবং আকারে বড়  হয়ে কখনো কখনো প্রায় ১ সেমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রতিকারঃ
  •     রোগমুক্ত বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
  •    ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  •    আগাম বীজ বপন রোগের প্রকোপ কমায়।
  •    রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত ফসলে প্রোপিকোনাজোল (টিল্ট ২৫০ ইসি) ১ লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
৫। রোগের নামঃ কান্ড পচা রোগ (Stalk rot)
রোগের কারণঃ ফিউজেরিয়াম (Fusarium), ডিপ্লেডিয়া (Diplodia), পিথিয়াম  (Pythium), আরউইনিয়া (Erwinia),  সিওডোমোনাস (Pseudomonas) ইত্যাদি দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে ।
রোগের বিস্তারঃ খরিফ মৌসুমে এ রোগ বেশী হয়ে থাকে। জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেশী ও পটাশের পরিমাণ কম হলে ছত্রাক জনিত কান্ড পচা রোগ বেশী হয়। শিলা বৃষ্টি বা শিকড় ক্ষত হলে আক্রমণ বাড়ে ।
রোগের লক্ষণঃ
  •     কান্ডের নীচের দিকে নরম ও পানি ভেজা দাগ পড়ে।
  •     শিলা বৃষ্টি বা শিকড় ক্ষত হলে আক্রমণ বেড়ে যায়।
  •     আক্রমণে গাছের কান্ড পচে যায় এবং গাছ মাটিতে ভেঙ্গে পড়ে।
প্রতিকারঃ
  •   সুস্থ ও সবল বীজ বপন করতে হবে। সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করতে হবে, বিশেষ করে নাইট্রোজেন ও পটাশ সার পরিমিত মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।
  •   ফসল কাটার পর আর্বজনা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  •   শস্য পর্যায় অনুসরণ করতে হবে।
  •   শিকড় বা কান্ড আক্রমণকারী পোকা দমন করতে হবে।
  •   কার্বেন্ডাজিম (অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
  •     ডাইফেনোকোনাজল (স্কোর ২৫০ ইসি) এক লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
৬। রোগের নামঃ মোচা ও দানা পচা রোগ (Ear rot/Cob and grain rot)
রোগের কারণঃ ডিপ্লোডিয়া (Diplodia), ফিউজারিয়াম (Fusarium), জিবেরেলা (Gibberella), পেনিসিলিয়াম (Penicillium), এসপারজিলাস (Aspergillus) ইত্যাদি ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ গাছে মোচা আসা থেকে পাকা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বেশী হলে এ রোগের আক্রমণ বেশী হয়।  পোকা বা পাখির আক্রমণে বা কান্ড পচা রোগে গাছ মাটিতে পড়ে গেলে এ রোগ ব্যাপকতা লাভ করে। এ রোগের জীবাণু বীজ অথবা আক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে। একই জমিতে বার বার ভূট্টার চাষ করলে এ রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
রোগের লক্ষণঃ
  •             প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত হলে পুরো মোচা ও দানা পচে যায়।
  •             আক্রান্ত মোচার খোসা ও দানা বিবর্ণ হয়ে যায়।
  •            স্বাভাবিক  না পুষ্ট হয় না, দানা কুচকে অথবা ফেটে যায়।
  •             অনেক সময় মোচাতে বিভিন্ন দানার মাঝে বা উপরে ছত্রাকের উপস্থিতি খালি চোখেই দেখা যায়।
প্রতিকারঃ
  •             দানা বা ঘাস জাতীয় শস্য বাদ দিয়ে শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে।
  •             গাছের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  •             পোকা ও পাখীর আক্রমণ হতে দানা রক্ষা করতে হবে।
  •             পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথে দেরী না করে মোচা সংগ্রহ  করতে হবে।
  •             প্রোপিকোনাজোল (টিল্ট ২৫০ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে গাছে ৭-১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
৭। রোগের নামঃ পাতার ভাইরাস রোগ (Virus Disease)
রোগের কারণঃ ভাইরাস দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ ভাইরাস রোগ পোকা (কর্ণ প্লান্ট হপার), সরগম ও জংলী ঘাস দ্বারা ছড়ায়।
রোগের লক্ষণঃ
  •             গাছের পাতায় লম্বালম্বি শিরা বরাবর সরু বা চওড়া হলুদ দাগ দেখা যায়।
  •             আক্রান্ত গাছ খর্বাকৃতির হয়, গাছে খাদ্য উৎপাদন ব্যহত হয়।
  •             মোচা ছোট আকারের হয় এবং ফলন হ্রাস পায়।
প্রতিকারঃ
  •              আক্রান্ত গাছ উঠিয়ে পুড়ে ফেলতে হবে।
  •              জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।
  •              দানা বা ঘাস জাতীয় শস্য বাদ দিয়ে শস্য পর্যায় অবল¤¦ন করতে হবে।
  •              কর্ণ প্লান্ট হপার এ রোগ ছড়ায়। তাই এ পোকা দমনের জন্য অ্যাডমায়ার প্রতি লিটার পানি ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
৮। রোগের নামঃ গুদাম পচা রোগ (Storage disease)
রোগের কারণঃ অ্যাসপারজিলাস (Aspergillus), পেনিসিলিয়াম (Penicillium) এবং রাইজোপাস (Rhizopus) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ বীজে আর্দ্রতা বেশী থাকলে দানা পচা রোগ বেশী হয়।
রোগের লক্ষণঃ
  •             মোচা বা দানা ভালভাবে না শুকিয়ে গুদামে রাখলে দানা পচে যায় ও বিবর্ণ হয়, দুর্গন্ধ বের হয় ও অংকুরোদগম ক্ষমতা কমে যায়।
  •             দানায় বিষ তৈরী হয় যা মানুষ ও পশুর জন্য ক্ষতিকর।
  •             গুদামে পচন বেশি হলে ছত্রাকের উপস্থিতি খালি চোখে দেখা যায়।
প্রতিকারঃ
  •              ভূট্টা পাকলে মোচা তাড়াতাড়ি সংগ্রহ করতে হবে ।
  •              দানা ছড়ানোর সময় যেন ভেঙ্গে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  •              দানা শুকিয়ে ১২% আর্দ্রতায় গুদামজাত করতে হবে।
  •              গুদামে পোকার আক্রমণ রোধ করতে হবে।
  •              গুদামে তাপমাত্রা যেন না বাড়ে সে জন্য বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।
  •              দানায় জলীয় অংশ কম রাখার জন্য বর্ষাকালে মাঝে মাঝে রোদ্রে শুকাতে হবে।
  •              কার্বেন্ডাজিম (অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
————————————–
লেখক:
উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব), মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই, শিবগঞ্জ, বগুড়া।
ইমেইলঃ zaman.path@gmail.com